বর্তমান
সময়ে স্মার্টফোন ট্যাপ করাটা খুব একটা কঠিন নয়। অনেকেই ভাবছেন কীভাবে সহজে এ
কাজ করতে পারে? তাদের প্রশ্নের উত্তর হলো- এ কাজের জন্য সেলফোন নেটওয়ার্ক
হ্যাক করার প্রয়োজন নেই। আপনার ফোনের ভালনেরাবিলিটি বা দুর্বলতা খুঁজে বের
করে সহজেই আপনার ফোনকে ট্যাপিং ডিভাইসে পরিণত করা সম্ভব।
সে যা-ই হোক
কেউ যদি আপনার ফোনে আড়ি পেতে কথোপকথন শোনে তাহলে আপনি কীভাবে তা বুঝবেন
এমন প্রশ্ন অনেকের মনেই ঘুরঘুর করছে। তাদের জন্য কয়েকটি কৌশল নিয়ে আলোচনা
করা হলো, যা খেয়াল করলে খুব সহজেই বুঝতে পারবেন আপনার ফোন ট্যাপ করা হচ্ছে।
অস্বাভাবিক ব্যাকগ্রাউন্ড নয়েজ
অনেকেই হয়ত
খেয়াল করেছেন যে, ফোনে কথা বলার সময় অস্বাভাবিক ব্যাকগ্রাউন্ড নয়েজ বা শব্দ
শুনতে পাওয়া যায় অনেক সময়। আবার কখনো বিপ দেওয়ার শব্দ অনর্গল শুনতে পাওয়া
যায়। এমন ঘটলে আপনি বুঝে নিবেন যে, আপনার ফোনে অন্য কেউ আড়ি পেতেছে। কথা
বলার ফাঁকে আপনি কথা না বলে চুপ থাকে তখনও যদি ফোনে ওই শব্দগুলো শুনতে পান
তাহলেও ধরে নিবেন, আপনি ট্যাপিং-এর শিকার হয়েছেন। আর একটি বিষয় হলো- আপনি
যার সঙ্গে কথা বলছেন তার মোবাইলের নেটওয়ার্ক বার ও আপনার মোবাইলের
নেটওয়ার্ক বার ফুল থাকে অথচ কথা বলার সময় তা ওয়েভের মতো কমে-বাড়ে তাহলেও
বুঝে নিবেন আপনার ফোনটি ট্যাপিং এর আওতায় রয়েছে।
ব্যাটারি ব্যাকআপ লক্ষ্য করুন
অনেক সময়
দেখা যায় যে, স্মার্টফোনে ব্যবহূত ব্যাটারির অবস্থা খুব ভালো, অথচ ফোনের
চার্জ খুব দ্রুত শেষ হয়ে যাচ্ছে! বিভিন্ন কারণে এ ঘটনাটি ঘটতে পারে।
স্মার্টফোনের যান্ত্রিক ত্রুটিও এর অন্যতম কারণ হতে পারে। যদি স্মার্টফোনের
যাবতীয় সঠিকভাবে কাজ করার পরও চার্জ দ্রুত শেষ হয়ে যায় তাহলে বুঝে নিবেন
আপনার ফোনে কেউ আড়ি পেতেছে বা আপনি ট্যাপিং এর শিকার। আপনার ফোন কল অ্যাপের
সাহায্যে তৃতীয়পক্ষের কাছে পাঠানোর সময় ফোনের ব্যাটারির চার্জ দ্বিগুণ
ক্ষয় হয় আর এর জন্যই ফোন ট্যাপ করা হলে ফোনের ব্যাটারির চার্জ দ্রুত শেষ
হয়ে যেতে পারে এবং ফোন অস্বাভাবিক গরম হয়ে উঠতে পারে। তবে স্মার্টফোনে
একসঙ্গে অনেক অ্যাপলিকেশন অন থাকলেও এমনটা হতে পারে।
অদ্ভুত লক্ষণ
কারো
স্মার্টফোন ট্যাপ করলে অনেক সময় সে ফোনটি নিজে নিজে বন্ধ ও চালু হয়। আবার
স্মার্টফোনটি অধিক পরিমাণে গরম হয়। কখনো কখনো স্মার্টফোনের ডিসপ্লের আলো
আপনা আপনি জ্বলতে দেখা যায়। আপনার ফোনটি ট্যাপিং এর আওতায় কিনা তা নিশ্চিত
করতে আপনার ফোনটি শাট ডাউন করুন। যদি সম্পূর্ণ ফোন শাট ডাউন হওয়ার পরেও
স্ক্রীনে আলো জ্বলে থাকে বা শাট ডাউন নিতে অনেক দেরি হয় কিংবা শাট ডাউন
ফেইল হয়ে যায়, তাহলে বুঝতে হবে অবশ্যই কোনো সমস্যা রয়েছে।
ফোনের বিল বেড়ে যাওয়া
ট্যাপিং এর
কাজে ব্যবহূত অ্যাপগুলো স্মার্টফোনের ডাটা ব্যবহার করে থাকে। যদি আপনার
ফোনে ডাটা প্ল্যান অ্যাক্টিভ করা থাকে তাহলে আপনার ফোনের ডাটা বিল বেড়ে
যেতে পারে। সেল ফোনের সিম যদি পোস্ট পেইড হয় তাহলে মাসের শেষের দিকে টের
পাবেন ফোনের বিল কী পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। যদি প্রিপেইড নম্বর ব্যবহার করে
থাকেন তাহলে বিল সংক্রান্ত বিষয়ে তেমন টের পাবেন না।
২০১৭ সাল জুড়ে বিশ্বব্যাপী মানুষ সবচেয়ে বেশি কী কী বিষয় সার্চ করেছে, তার তালিকা প্রকাশ করেছে সার্চ ইঞ্জিন গুগল। বিশ্বব্যাপী সাধারণভাবে সার্চ করা বিষয়ের পাশাপাশি বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে এবং বিভিন্ন দেশ থেকে সার্চ করা সেরা দশটি বিষয়ের তালিকাও আছে এতে।
হারিকেন ইরমায় ক্ষতিগ্রস্ত একটি শহর; Source: Wikimedia Commons
চলুন এক নজরে দেখে নেই, কী কী স্থান পেয়েছে এই তালিকায়:
আন্তর্জাতিকভাবে সবচেয়ে বেশি সার্চ করা হয়েছে হারিকেন ঝড় ইরমার নাম (Hurricane Irma)। এ বছরের আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসে প্রলয়ঙ্করী ঝড়টি আঘাত হেনেছিল যুক্তরাষ্ট্রে।
এরপরেই আছে যথাক্রমে আইফোন ৮ (iPhone 8) এবং আইফোন এক্স (iPhone X)।
বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে বেশি সার্চ করা ব্যক্তির তালিকায় প্রথমেই আছে ম্যাট লয়ারের (Matt Lauer) নাম। এই মার্কিন সাংবাদিক এবং টিভি উপস্থাপক তার সহকর্মীদেরকে যৌন হয়রানি করার অভিযোগে বছর জুড়ে আলোচিত ছিলেন। তার নাম একইসাথে বিশ্বজুড়ে সার্চ করা সাধারণ তালিকায়ও চতুর্থ স্থান অধিকার করেছে। এছাড়াও সবচেয়ে বেশি সার্চ করা ব্যক্তিদের তালিকায় অন্য যারা স্থান পেয়েছে, তাদের অধিকাংশই যৌন কেলেংকারির দায়ে অভিযুক্ত। তালিকার অন্য কয়েকজন হলেন Meghan Markle, Nadia Toffa, Harvey Weinstein, Kevin Spacey প্রমুখ।
ম্যাট লয়ার; Source: usmagazine.com
সেলিব্রেটিদের মধ্যে বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে বেশিবার সার্চ করা হয়েছে মেগান মার্কেলের (Meghan Markle) নাম। গত নভেম্বরে ব্রিটিশ রাজপুত্র হ্যারির সাথে মার্কেলের বাগদান সম্পন্ন হওয়ার কালে তিনি আলোচনার শীর্ষে উঠে আসেন। আলোচিত অন্যান্য তারকারা হলেন Kevin Spacey, Gal Gadot, Louis C.K., Meryl Streep প্রমুখ।
সঙ্গীতশিল্পীদের মধ্যে সার্চ তালিকায় শীর্ষে স্থান পেয়েছেন মার্কিন পপ তারকা আরিয়ানা গ্রান্ডে (Ariana Grande)। এ বছর ব্রিটেনের ম্যানচেস্টারে তার কনসার্টের প্রবেশপথে জঙ্গি সংগঠন আইএসের আত্মঘাতী হামলায় ২৩ জন নিহত এবং পাঁচ শতাধিক আহত হলে তার নাম আলোচনায় উঠে আসে। এছাড়াও যারা আলোচনায় এসেছেন, তারা হলেন Linkin Park, Lady Gaga, Mariah Carey, Ed Sheeran প্রমুখ।
সঙ্গীতের মধ্যে শীর্ষস্থান অধিকার করেছে বছর জুড়ে আলোড়ন সৃষ্টিকারী গান দেসপাসিতো (Despacito)। পুয়ের্তোরিকান শিল্পী লুইস ফনসির গাওয়া এই গানটি ৩০০ কোটিবারের চেয়ে বেশি ভিউ নিয়ে ইউটিউবের সবচেয়ে বেশি দেখা ভিডিওর স্থান অধিকার করে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গানটির প্যারোডিগুলোও বেশ জনপ্রিয়তা পায়। দেসপাসিতোর পরে স্থান পাওয়া অন্যান্য গানগুলো হচ্ছে Shape of You, Perfect, Havana, Look What You Made Me Do প্রভৃতি।
দেসপাসিতো গানের দৃশ্য; Source: npr.com
সবচেয়ে বেশি সার্চ করা চলচ্চিত্রের তালিকায় শীর্ষস্থান অধিকার করেছে ইট(It)। জনপ্রিয় হরর লেখক স্টিফেন কিং এর উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত হরর জঁনরার এই মুভিটি বছর জুড়ে আলোচনায় ছিল। এছাড়াও এই তালিকায় অন্যান্য চলচ্চিত্রের মধ্যে আছে Beauty and the Beast, Wonder Woman, Get Out, Justice League প্রভৃতি।
সবচেয়ে আলোচিত ধারাবাহিকের তালিকায় শীর্ষস্থানে আছে স্ট্রেঞ্জার থিংস (Stranger Things)। তিন কিশোরের অ্যাডভেঞ্চার এবং আধিভৌতিক জগতে তাদের বিচরণের কাহিনী নিয়ে নির্মিত এই ধারাবাহিকটির দ্বিতীয় মৌসুম প্রচারিত হয় এ বছর। এছাড়াও তালিকায় এসেছে 13 Reasons Why, Big Brother Brasil, Game of Thrones, Iron Fist প্রভৃতি।
বাংলাদেশ থেকে সবচেয়ে বেশিবার সার্চ করা ব্যক্তিদের তালিকায় এক নম্বরেই আছে মডেল সাবিলা নুর। এরপর আছে যথাক্রমে মিয়া খলিফা ও ক্রিকেট তারকা তাসকিন আহমেদের নাম। নিচে বাংলাদেশ থেকে সার্চ করা সেরা দশ ব্যক্তির নাম দেওয়া হলো:
বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ নিয়ে বেশ উত্তেজনা ছড়াচ্ছে
বর্তমান সরকার ও দেশবাসির মধ্যে । এ উপলক্ষে ঢাকায় আতশবাজি পোড়ান হবে ১৬ কোটি
টাকার । কিন্তু এ সম্পর্কে কিছু না জানা তথ্য আপনাদের দিচ্ছি যা মিডিয়া কখনই
প্রচার করে না ।
বাংলাদেশের
এই বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট প্রকল্পে মোট ব্যয় হচ্ছে ২
হাজার ৯০২ কোটি টাকা। সরকার নিজস্ব তহবিল থেকে এক হাজার ৫৪৪ টাকা এবং অবশিষ্ট এক হাজার ৩৫৮ কোটি টাকা
ঋণ হিসেবে দিয়েছে বহুজাতিক ব্যাংক আইচ এস বি সি।
বাংলাদেশের স্যাটেলাইটি নির্মাণ করেছে ফ্রিন্সের কোম্পানি থালেস
এলিনিয়া । থালেসের সাথে চুক্তি হচ্ছে ২৪৯ মিলিয়ন ডলার ।
ফ্লোরিডার কেপ ক্যানাভেরাল এয়ারফোর্স স্টেশন
Falcon 9 FT (Block 5) থেকে উৎক্ষেপণ কিরা হবে। কিন্তু বারবার তার সময় পেছানো হয়েছে
এবং একবার উৎক্ষেপণ বিফল হয়েছে ।
বাংলাদেশের যে ধরনের স্যাটেলাইট, তার ডিজাইন খরচ ২৫ মিলিয়ন ডলার, নির্মাণ খরচ
১০ মিলিয়ন ডলার, আর উৎক্ষেপণ খরচ ৩৯ মিলিয়ন ডলার ( ছোট স্যাটেলাইটের ক্ষেত্রে ) । সব মিলিয়ে ৮০ মিলিয়ন ডলারের মধ্যে
সব কাজ শেষ । অথচ এই স্যাটেলাইটের জন্য বাংলাদেশ খরচ
করছে তিন গুন ২৪৯ মিলিয়ন ডলার, যা বাংলাদেশি টাকায় ২ হাজার কোটি টাকার মত ।
এর বাইরে আরও ৯শ কোটি টাকা কোথায় খরচ
হচ্ছে তা কেউ জানেনা । জানতে পারে শেখ হাসিনা ও তার উপদেষ্টা পুত্র ।
বাংলাদেশের
এই স্যাটেলাইটের জন্য কোনো নিজস্ব অরবিট বরাদ্দ নাই ।
এর আগে আইটিইউ বাংলাদেশকে
নিরক্ষ রেখার ১০২ ডিগ্রী স্লট বরাদ্দ দেয়। কিন্তু প্রভাবশালি দেশের বাধার মুখে তা
বাতিল হয় । বিকল্প হিসেবে ৬৯ ডিগ্রিতে স্যাটেলাইট উতখেপনের
প্রস্থাব দেওয়া হয় বাংলাদেশকে। কিন্তু তাতেও আপত্তি তোলে মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, চীন।
পরে রাশিয়ান কোম্পানি
ইন্টারস্পুটনিকের নিজস্ব ১১৯.১ ডিগ্রির স্লট প্রায়
২৮ মিলিয়ন ডলারে ১৫ বছরের জন্য ভাড়া নেয় বাংলাদেশ। জানা গেছে, ১১৯.১ ডিগ্রির অরবিটাল
স্লটটি বাংলাদেশ থেকে অনেক দূরে ( প্রায় ৩০ ডিগ্রি পূর্বে ) । এটা ফিলিপাইনেরও আরও
গভীরে । অরবিটাল
স্লট বা নিরক্ষ রেখাটি অস্ট্রেলিয়া থেকে শুরু হয়ে ইন্দোনেশিয়া দিয়ে ফিলিপাইনের
পশ্চিমাংশ এবং ভিয়েতনামের পূর্ব দিয়ে চীন হয়ে মঙ্গোলিয়া হয়ে রাশিয়ার ওপর দিয়ে চলে
গেছে। ফলে অতোদুর থেকে স্বাভাবিক ভাবেই স্যাটেলাইট বাংলাদেশের
ফুটপ্রিন্ট (ছবি) গ্রহনের সমস্যা হবে বলে মনে করেন বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির
সাধারন সম্পাদক এ আর সরকার । তিনি বলেন, প্রায় ৩০ ডিগ্রি দূরে স্যাটেলাইট বসালে বাংলাদেশ থেকে তা অ্যাঁগুলার হয়ে যাবে।
অ্যাঁগুলার অবস্থান থেকে ছবি নিলে তা ভাল না হওয়ার আশঙ্খা বেশি।
নীল তিমি তো সকলেই চেনেন। তারা শত শত বছর বেঁচে থাকে। কিন্তু তাদের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য আছে। জীবনের একটি পর্যায়ে নীল তিমি নিজেই চলে আসে সমুদ্র তীরে। ২০০৮ সালে ৫৫ টি নীল তিমি একযোগে সমুদ্র সৈকতে চলে আসে। কিন্তু উদ্ধারকারীরা তাদেরকে সাগরে ফেরত পাঠালেও, তারা তীরের দিকে চলে আসে! আত্মহত্যাই যেন তাদের উদ্দেশ্য! ধীরে ধীরে নিজেকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়ার এই গেইমটির তাই নাম দেয়া হয়েছে নীল তিমি বা Blue Whale।
.
রাশিয়ান আন্ডারওয়ার্ল্ড এর যুবক ফিলিপ বুদেকিন ছিল মনোবিজ্ঞানের ছাত্র। ব্লু হোয়েল গেইম তারই এক উদ্ভট আবিষ্কার। তাকে গ্রেপ্তার করে তার জবানবন্দী শুনে অবাক হয়ে যায় পুশিল ডিপার্টমেন্ট! তার দাবী, "সে সমাজ পরিষ্কার করতেই এই গেইম বানিয়েছে। মানসিক বিষাদগ্রস্ত মানুষের সমাজে কোনো প্রয়োজন নেই। আর এ গেইম শুধু মানসিক বিষণ্ণতায় থাকা লোকের পক্ষেই খেলা সম্ভব।" এই মাস্টারমাইন্ডের বর্তমান ঠিকানা জেল খানা হলেও তার দলের লোকেরা এই গেইম নিয়ে দিন দিন হয়ে উঠছে বিপদজনক।
.
আসুন দেখি কি আছে এই গেইমে, যার জন্য নাকি মানুষ জীবন দিয়ে দেয়!
এই এমন একটি গেইম যেখানে আপনাকে চেলেঞ্জ দেওয়া হবে এবং তা নিতে বাধ্য করা হবে। ৫০ টি লেভেল সম্পন্ন এই গেমটির প্রথম ১০ লেভেল একেবারেই সোজা এবং যে কেওই এটি পুরণ করতে পারবে। যেমন, বলা হবে সকাল ৪:২০ এ উঠতে হবে, একটি হরর মুভি দেখতে হবে, আপনার প্রিয় খাবার খেতে হবে ইত্যাদি। কিন্তু এর লেভেল যতই বাড়তে থাকে ততো বেশি এটি ভংকর রূপ ধারণ করতে থাকে। এবং এর ৫০ নং লেভেলে প্লেয়ার কে সুইসাইড করার চ্যালেঞ্জ দেওয়া হয়। আর খুব কম মানুষই আছে যারা এর থেকে বেঁচে ফিরেছে।
.
প্রথম ১০টি চ্যালেঞ্জ কম্পিলিট হওয়ার পর গেমারকে পরবর্তী ১০ লেভেল খেলার জন্য প্রিপেয়ার করানো হয়। যেহুতু টিনএজরা কল্পনা প্রবল হয়ে থাকে সেহেতু এইহ লেভেল গুলোতে বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে প্রচুর কল্পনা করানো হয়। আর এই পর্বে চলতে থাকে ছলেবলে কৌশলে তাদের পার্সনাল ইনফরমেশন হাতিয়ে নেওয়ার কাজ। আর একজন প্লেয়ার নিজের অজান্তেই তাদেরকে সব তথ্য দিতে থাকে। এই পর্বে ১৫ লেভেলের পর গেমারকে একটি নীল তিমির একটি ছবি আঁকতে শেখানো হয় এবং পরবর্তী কোন এক লেভেলে ব্লেড দিয়ে হাত কেটে উক্ত ছবিটি আঁকতে বলা হয়। বলা হয় যে, ব্লেড অথবা সুচ দিয়ে তোমার হাতে একটি ব্লু হোয়েলের (নীল তিমির) ছবি আঁক, কিন্তু সাবধান এর ক্ষত যেন বেশি গভীর না হয়। আর এভাবেই শেষ হয় আরও দশটি লেভেল ।
.
প্রথম ২০টি চ্যালেঞ্জ কম্পিলিট হওয়ার পর পরবর্তী ২১-৩০ নং লেভেলে গেমার টিম তাদের কৌশল পাল্টে ফেলে। কারণ ইতিমধ্যেই তারা একজন গেমারের ছোট-খাটো সকল তথ্য ও পার্সনাল ইনফরমেশন নিয়ে নিয়েছে। এর পরই তারা গেমারকে বেশ কিছু কঠিন চ্যালেঞ্জের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়। এই পর্বেরহ চ্যালেঞ্জগুলোর অনেকটা “হিপন্সিস” এর মাধ্যমে ঘটানো হয়। হিপ্নসিস হলো মানুষের মস্তিস্ক নিয়ন্ত্রন করার একটি প্রক্রিয়া। শুরুতেই আমি বলেছি নির্মাতা এবং তার টিম মনোবিজ্ঞানের স্টুডেন্ট। আর এই প্রক্রিয়াকে নিখুঁতভাবে কাজে লাগিয়ে গেমারকে পরবর্তী চ্যালেঞ্জের জন্য প্রস্তুত করা হয়। যেমন, ঠান্ডার রাতে একটা হালকা ড্রেস পরে সারারাত জেগে থাকা এবং সারাদিন না খয়ে থাকা, পরিবারের সাথে ঝগড়া করা এবং বাড়ি থেকে টাকা চুড়ি করা, ঘনিষ্ট বন্ধু-বান্ধবের একান্তই কিছু ব্যক্তিগত জিনিশ চুরি করা, ভোররারে কবরস্থানে যাওয়া এবং প্রমান হিসেবে সেগুলোর একটি করে ফটো আপলোড দেওয়া ইত্যাদি। ২৫ লেভেলের পর গেমারকে বিভিন্ন ড্রাগ নিতে অভ্যাস্ত করা হয় এবং খুব সুক্ষভাবে হিপ্নসিসের মাত্রা বৃদ্ধি করে লেভেল ৩০ পর্যন্ত এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
.
৩০ টি চ্যালেঞ্জ সম্পুর্ন হলে ব্লু হোয়েল টিম আরও বেশি কৌশলী হয়ে উঠে এবং তারা পরবর্তী লেভেল গুলো একেবারেই আনলক করতে চাই না। আর এদিকে ৩০ টি লেভেল কম্পিলিট করে একজন গেমারের অবস্থা এমন হয়ে দাঁড়ায় যে, সে পরবর্তী চ্যালেঞ্জ পাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠে এর জন্য সে যেকোন কিছু করতে করতে প্রস্তুত থাকে। আর তারা এটাকেই সুযোগ হিসেবে কাজে লাগিয়ে তারা গেমের ৩১ নং চ্যালেঞ্জ আনলক করে দেয় আর তাতে বলা হয় যে, তুমি নগ্ন পোজে বেশকিছু ফটো তুলে আমাদের কাছে আপলোড করো।
গেমার তখন ড্রাগের কারণে হোক অথবা হিপন্সিস জনিত কারনেই হোক সে গেমটার প্রতি এতটাই অ্যাফেক্টেড হয়ে পরে যে সে নিজের নগ্ন ফটো আপলোড দিতেও দ্বিধাবোধ করে না। আর এ ভাবেই গেমটি তাকে পরবর্তী লেভেল গুলোতে বাধ্য করে অতি ভারিমাত্রার ড্রাগ নিতে, কারও সাথে সেক্স করে তার ফটো আপলোড দিতে আর গেমটির ৪০ নং চ্যালেঞ্জে বলা হয় যে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় অন্তত পক্ষে ২৫ থেকে ৩০ টা সুচ প্রবেশ করিয়ে তার একটি ফটো আমাদের কাছে সেন্ড করো।
.
এরপর আরো মারাত্মক হয়ে উঠে ব্লু হোয়েল টিম। তারা গেমারকে ড্রাগে আসক্ত করে এবং ব্ল্যাকমেইল শুরু করে। এ পর্যায়ে কোনো গেমার চাইলেও আর গেইম থেকে বের হতে পারে না। বলা হয় এ গেইম আনইন্সটল করলে তাদের নগ্ন ছবি আর পার্সোনাল ইনফরমেশন অনলাইনে ছড়িয়ে দেওয়া হবে, ড্রাগ সেবনের ছবি পুলিশকে দেওয়া হবে ইত্যাদি। এই লেভেলে তারা গেমারকে দিয়ে গেইম টির লিঙ্ক শেয়ার করায় তার মত কোনো বন্ধু বা ব্যক্তির কাছে। যা তাদের মূল লক্ষ্য। ৫০ তম লেভেলে টিম গেমারকে একটি ড্রাগ সংগ্রহের নির্দেশনা দেয়। নির্দেশনা অনুযায়ী গেমার ড্রাগটি সংগ্রহ করে ফেলে এবং সেটি নিয়ে একটি উঁচু ভবনের ছাদের একবারে কিনারায় দাঁড়িয়ে সেটিকে নিজের শরীরে পুশ করে দেয়। পুশ করার একটি সেলফি তুলে সেটি ব্লু হোয়েলে আপলোড করে এবং এর টিম মেম্বাররা এটি নিশ্চিত হয়ে তাকে কংগ্রাচুলেশন্স জানায় । বলে তুমি এই গেমের সকল লেভেল সম্পুর্ন করেছ এবং তোমাকে আমাদের আর দরকার নেই, তাই আজ থেকে তুমি মুক্ত। নিচে তাকিয়ে দেখ তোমার গন্ত্যব্য তোমাকে ডাকছে, সূতরাং,
বেশি দেরি করো না, এক্ষনি ঝাঁপ দাও। আর গেমার তখন ড্রাগ অ্যাফেক্টেড থাকার কারনে সম্পুর্ন হীতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলে এবং বুঝতে পারে না যে, তাকে কি করতে হবে। প্রচন্ড ঘু্মের চাপে তার চোখ বন্ধ হয়ে আসে, সে চারদিকে ঝাপসা দেখতে শুরু করে। নিজের অজান্তেই সে সত্যি সত্যিই ঝাঁপ দিয়ে বসে এবং নিজের মুক্তির পথ খুজে নেয়। আর ব্লু হোয়েলও খুজতে থাকে তার পরবর্তী শিকারকে।
.
পুরো গেইমে টিমের সাথে গেমারের যোগাযোগের প্রক্রিয়াটি গোপন রাখতে বলা হয়। আর এই গেইমের লিঙ্কটিও বা গোপন। আপনার আমার সাধারণ ব্রাউজার দিয়ে সে লিঙ্কে ঢোকা সম্ভব নয়। এরজন্য দরকার হয় একটি বিশেষ ব্রাউজার এর। যা একজন গেমারের থেকে অন্যজনের কাছে যায়!
এই টিম এতটাই ধূর্ত যে তদন্তকারীরা এখনো তাদের কাছে পোঁছাতে পারছে না। রাশিয়া, আমেরিকা, চীন, ইংল্যান্ড এর মত দেশগুলো ২০১৫ সাল থেকেই আক্রান্ত এ গেইমে। সাড়া বিশ্বে মৃতদের ৯০% এর বয়স ১২-১৮! যাদের অধিকাংশ ছিল, পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন, মানসিকভাবে বিষণ্ণ, প্রেমে ব্যার্থ বা অবসাদগ্রস্ত। আমেরিকা, রাশিয়া বা চীনের মত দেশগুলো স্কুলে স্কুলে Anti Blue Whale ক্যাম্পেইন চালু করেছে। টিনএজারদের ইন্টারনেট ব্যবহারে আনছে নিয়ন্ত্রণ। গুগোল ব্লু হোয়েলের ব্যাপারে যেকোনো সার্চে নজর রাখছে। তারপরও থামছে না এই মরণ থাবা।
.
সম্প্রতি আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে দুজন এবং কয়েকদিন আগে আমাদের দেশে ঢাকায় ১৩ বছরের এক তরুণী প্রাণ হারিয়েছে এই গেইমে। মৃতদের সবার শরীরেই পাওয়া যায় নীল তিমির চিহ্ন! আমার এই আর্টিকেলটি লিখার উদ্দেশ্য আপনাদের কৌতুহল জাগানো নয়। আপনাদের সতর্ক করা। আপনারা বুঝতেই পারছেন কি করতে হবে।
.
প্রশ্ন হলো, কেন আমরা ১২/১৩ বছরের বাচ্চার হাতে এন্ড্রোয়েড তুলে দিচ্ছি? ইন্টারনেটের কোন যায়গাটাতে বিচরণ করছে আমাদের টিনএজাররা? তাদের কিসের এতো বিষণ্ণতা? আমরা কি তাদের পর্যাপ্ত সময় দিচ্ছি? জানতে চাইছি কি তাদের সমস্যাগুলোর কথা? কেন তারা তাদের সমস্যাগুলো আমাদের সাথে শেয়ার না করে শেয়ার করছে ব্লু হোয়েলের সাথে!
এটি মরণ ফাঁদ। এর থাবা ভয়াল। একবার ঢুকে গেলে খুব কম লোকই ফিরে আসতে পেরেছে এই গেইম থেকে। আর এই গেইম আপনার কাছে আসবে আপনারই কাছের কারো থেকে। এই গেইমের লিঙ্ক পেলে ফাদে পা না দিয়ে তাকেই বাঁচানোর চেষ্টা করুন। কারণটা নিজেই পড়েছেন। বিষণ্ণতা কাটানোর অনেক উপায় আছে। ব্লু হোয়েল কোনো সমাধান নয়। এটি একটি নেশা, এটি মৃত্যু...